দুরুদ পড়ার ফজিলত সম্পর্কে
নবী করীম ( সা: ) বলেন যে ব্যক্তি দুনিয়াতে আমার প্রতি যত দরুদ পাঠ করবে কেয়ামতের দিন সে ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকট বতিৃ থাকবে। আমরা নবীর প্রতি যত দুরুদ পাঠকরব কিয়ামতের দিন নবী করীম ( সা: ) তত কাছাকাছি থাকবো।
এই জন্য আমরা দুনিয়াতে থাকতেই নবী করিম ( সা: ) এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করব। আল্লাহ তায়া আলা আমাদেরকে বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করার তৌফিক দান করুক। (আমিন) তাহলে চলুন আর দেরি না করে দরুদ শরীফ পাঠ করার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসি।
দরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত ১--৫ পর্যন্ত
দরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত ৬--১০ পর্যন্ত
দরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত ১১--১৫ পর্যন্ত
দরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত ১৬--২০ পর্যন্ত
দুরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত ২১ -- ২৫ পর্যন্ত
দরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত১--৫ পর্যন্ত
১। নবী করীম ( সা: ) বলেন যে ব্যক্তি দুনিয়াতে আমার প্রতি যত দরুদ পাঠ করবে কেয়ামতের দিন সে ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকট বতিৃ থাকবে ।
২। নবী করীম ( সা: ) বলেন কোন ব্যক্তি যদি দুনিয়াতে আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে। আল্লাহ তায়ালা তার জন্য সঙ্গে সঙ্গে দশটি রহমত নাযিল করেন দেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ওই মুহূর্তে তার দশটি ছোট অপরাধ মাফ হয়ে যায়। আল্লাহ ওই মুহূর্তে তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়।
৩। নবী করীম সা: একদিন সাহাবীদের সামনে আসলেন আনন্দ মাখা চেহারা নিয়ে সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসূল সা: আজকে আপনাকে কেন এত আনন্দ মাখা চেহারা লাগছে, নবী করীম সা: জবাব দিলেন । আমার কাছে ফেরেশতা আসছে আপনি কি সন্তুষ্ট না যদি আপনার কোন উম্মত আপনার প্রতি একবার দরূদ পাঠ করে। আমি আল্লাহ সাথে সাথে তার প্রতি দশটি রহমত নাযিল করি, এরপর বলেন আপনার যদি কোন প্রতি একবার সালাম দেয় আমি আল্লাহ তার প্রতি ১০ টা শান্তি নাযিল করে দেয়। দশটা মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়।
৪। দরুদ শরীফ পড়লে জিন্দেগির গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেয়।
নবীর এক সাহাবা উবাই ইবনে কাব রা: বলেন রাতের তিন ভাগের দুই ভাগ যখন চলে যায় আল্লাহর রাসূল সা: বলেন হে জনগণ তোমরা আল্লাহকে স্মরণ করো এই কথা বলার পর আল্লাহর নবী বলেন সিঙ্গার প্রথম ফু আইসা গেছে কেমন যেন, দ্বিতীয় ফুটা অচিরেই আসবে, সাহাবা ওবাই ইবনে কাব বলেন ইয়া রাসুল সা: আমি আপনার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পড়ি।
ওবা ইবনে কাব বললেন ইয়া রাসুল সা: আমি দিনে আপনার উপর কতক্ষণ সময় দরুদ পড়বো আমাকে বলে দেন আল্লাহর নবী সা: বললেন তোমার মনে যা চায় তুমি পড়ো। ওবায় ইবনে কাব বললেন আমি দিনের চার ভাগের একভাগ আপনার উপর দরুদ পাঠ করবো হবে কিনা, নবী করীম সা: বললেন এই চার ভাগের এক ভাগের ও বেশি সময় যদি তুমি দরুদ পড়ো তাহলে এটা তোমার জন্য কল্যাণ, ও ওবাই ইবনে কাব বললেন আমি দিন টাকে দুই ভাগ করব এক ভাগ আপনার প্রতি দরুদ পাঠ করবো হবে কিনা।
রাসুল সা: বললেন তোমার যা মনে চায় তাই পড়, রাসূলসা: বললেন এর চাইতেও যদি বেশি পড়ো তাহলে তোমার জন্য আরো কল্যাণ। সাহাবা ওবাই ইবনে কাব বললেন আমি দিনটাকে তিন ভাগ করব দুই ভাগ আপনার প্রতি দরুদ পাঠ করব হবে কিনা। নবীজি বললেন এর চেয়েও যদি বেশি পড়তে পারো তাহলে তোমার জন্য আরো কল্যাণ।
এরপর সাহাবা ওবায় ইবনে কাব বললেন আমি সারাদিন যখনই সময় পাবো তখনই আপনার উপর
দরুদ পাঠ করবো আজ থেকে নিয়ত করে ফেললাম। নবীজি বললেন তাই নাকি, ওবাই ইবনে কাব
বললেন হা। আল্লাহর নবী বলেন তাহলে আর কোন তোমার চিন্তা নাই পেরেশানি নেই আল্লাহ
তোমার সকল চিন্তা ও পেরেশানি দূর করে দিবে তোমার জিন্দেগি সব গুনাহ মাফ করে দেয়া
হবে।
৫। নবী করীম সা: বলেন মুয়াজ্জিনের আযান শেষ হওয়ার পর আমার প্রতি দরুদ পড়।
দরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত ৬--১০ পর্যন্ত
৬। নবী করীম সা: বলেন জুমার দিন আমার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পড়া। নবী করীম সা: বলেন জুমার দিন সবচাইতে উত্তম দিন।
৭। নবী করীম সা: বলেন কোন মজলিসে বসার আগে একবার হলেও আমার উপর দরুদ পড়া।
৮।নবী করীম সা: বলেন মসজিদে ঢুকার সময় দরুদ পড়া। ও বের হওয়ার সময় দরুদ পড়া।
৯। রাসুলের উপর দরুদ পাঠ করলে ফেরেশতা তার জন্য জান্নাতের দোয়া করতে থাকে
১০। রাসুলের উপর দরুদ পাঠ করলে ফেরেশতারা তার বাবা মার নাম ধরে আল্লাহর কাছে বলতে থাকে যে অমুক ব্যক্তি আপনার জন্য দরুদ পাঠ করেছে।
দরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত ১১-- ১৫ পর্যন্ত
১১। রাসুলের উপর দরুদ পাঠ করলে সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তির জন্য রাসূল সা: তার জন্য দোয়া করে।
১২। কেউ যদি সকালে দশবার ও সন্ধ্যায় দশবার রাসুলের উপর দরুদ পাঠ করে কিয়ামতের দিন রাসূল সা: তার জন্য শাফায়াতের দোয়া করবে
১৩। কেউ যদি রাসূলের উপর দরুদ পাঠ করে তাহলে দুনিয়াতে তার যত বিপদ আছে সকল বিপদ হতে আল্লাহ তাকে মুক্তি দান করবে।
১৪। যদি কোন ব্যক্তি দৈনিক ১০০০ বার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তা'আলা তাকে দুনিয়াতে জান্নাত না দেখাইয়া মৃত্যু দান করে না ।
১৫। বেশি বেশি দরুদ পাঠ করলে আল্লাহতালা তাকে হেদায়েতের পথে রাখে।
দরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত ১৬--২০ পর্যন্ত
১৬। বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করি কখনো কৃপণ হয় না।
১৭ বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করি কিয়ামতের ভয়াবহতা থেকে বেঁচে যাবে।
১৮। বেশি বেশি দরুদ পাঠ করি পুলসিরাতে তার পা মজবুত হবে।
১৯। বেশি বেশি দুরুদ শরীফ পাঠ করলে কিয়ামতের দিন মিজানের পাল্লা কে আল্লাহতালা ভারী করে দিবেন।
২০। বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করলে রাসূল( সা:) এর ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়।
দরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত ২১-- ২৫ পর্যন্ত
২১। যে ব্যক্তি যত বেশি দরুক শরীফ পাঠ করবে কিয়ামত পর্যন্ত তার ছাওয়াব লিখতে থাকা হয়।
২২। আল্লাহর রহমতে দরজা খুলে দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি যত বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার জন্য রহমতের দরজা খুলে দেন।
২৩। দোয়া কবুলের পূর্ব শর্ত। হাদিসে এসেছে রাসূল ( সা:) বলেন দোয়া আকাশ ও যমিনের মাজে থেমে থাকে যতক্ষ না রাসুল সা: এর উপর দুরুদ না পড়া হয়।
২৪। পাপ মোচন ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায় । রাসুল সা: বলেন যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দুরুদ পাঠ করে তার দশটি পাপ মুছে দেওয়া হয় দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। তার উপর দশটি রহমত বর্ষণ করা হয়।
২৫। দুরুদ শরীফ পাঠ না করলে কিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের পথ ভুলিয়ে দেওয়া হবে।
শেষ কথা:
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে আমরা সব সময় রাসুল সা: এর উপর দরুদ পড়বো
কেননা দরুদ শরীফ হচ্ছেএকমাত্র দোয়া কবুলের প্রধান মাধ্যম ও রাসূল সা সালাম
কে খুশি রাখার উপায় । দরুদ শরীফের আরো অনেক উপকারিতা আছে যা আমি আপনাদেরকে
আরেকটি কন্টেন্টে তুলে ধরবো। (ইনশাআল্লাহ)
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url